বিদেশ ডেস্ক ॥ সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির ইঙ্গিত দিয়েছেন। সৌদি যুবরাজ বলেছেন, ইরানের সঙ্গে তিনি ভালো সম্পর্ক চান। বাগদাদে দুই দেশের মধ্যে গোপন বৈঠকের পর এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। একাধিক সূত্রে গোপন বৈঠকটি নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র বিরোধে জড়িয়ে আছে সৌদি আরব ও ইরান। ২০১৬ সালে সৌদি আরবে এক শিয়া ধর্মগুরুর ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে ইরানে সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়। গত মঙ্গলবার রাতে একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ বলেন, ‘ইরান আমাদের প্রতিবেশী দেশ। তাদের সঙ্গে একটি ভালো ও বিশেষ সম্পর্ক আশা করছি আমরা সবাই।’ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘ইরান নিয়ে জটিল পরিস্থিতি আমরা চাই না। আমরা ইরানের উন্নতি চাই, যা এ অঞ্চল ও বিশ্বকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেবে।’ তেহরানের ‘নেতিবাচক কর্মকাণ্ড’ নিয়ে সমাধান খুঁজতে রিয়াদ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে বলে তিনি জানান। এর আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে ইরানকে একহাত নিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ। আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিনষ্টে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ এনেছিলেন তেহরানের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে ইরান নিয়ে তাঁর মনোভাবের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তবে তেহরানের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি মোহাম্মদ বিন সালমান। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাদেমির ব্যবস্থাপনায় বাগদাদে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে একটি গোপন বৈঠক হয়। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯ এপ্রিল দুই দেশের মধ্যে আলোচনার প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের বিষয়টি বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেন ইরাক সরকারের এক কর্মকর্তা। অন্যদিকে পশ্চিমা এক কূটনীতিক জানান, দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক স্থাপন ও উত্তেজনা নিরসনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৈঠকটি নিয়ে তিনি আগ থেকে জানতেন। তবে বৈঠকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি সংবাদমাধ্যমে অস্বীকার করেছে রিয়াদ। তেহরান জানিয়েছে, তারা সব সময় সৌদি আরবের সঙ্গে যেকোনো আলোচনাকে স্বাগত জানায়।
Leave a Reply